শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন
বাঙালি জাতির চলমান জীবনে রাজনৈতিক আলোচনা একটি বিশেষ বিষয়। রাজনৈতিক আলোচনাতে তুখোড় রাজনীতিবিদের বক্তৃতার জায়গা দখল করে নিয়েছে দুর্নীতিবাজ নেতা নামধারী ব্যক্তিরা। স্থানীয়, জাতীয় রাজনীতি নিয়ে হতাশা সবখানে।দীর্ঘসময় ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে বাঙালি জাতি দেশটাকে পেয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার পরে সময়ের পট পরিবর্তনে মতের ভিন্নতাতে নতুন দল সৃষ্টি হয়েছ নীতি ও আদর্শগত বৈষম্যতার কারণে।
দুর্ভাগ্যজনক হলে ও সত্যি যে, দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবার পর রাজনীতিতে ব্যবসায়ীদের অনুপ্রবেশ ঘটে ভোটের রাজনীতির মধ্য দিয়ে। টাকা এবং ভোট রাজনীতির মূলধারাকে নষ্ট করে দেয় ক্রমশ। বরং টেন্ডারবাজি, তদবির আর প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে রাতারাতি বড় লোক হবার স্বপ্ন দেখে। এতে করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা রাজনীতি থেকে দূরে সরে আসে। ছাত্র রাজনীতি হয়ে পড়ে মেধাশূন্য।
অন্যদিকে মাঠ পর্যায়ের নেতাদের মূল্যায়ন হয় না ভোটের সময়। অর্থ ছাড়া জাতীয় নির্বাচনে দলের সর্মথন পাওয়া হয় সোনার হরিণের মত। এ অবস্থায় এলাকার জনগণ দলকে সর্মথন দিতে গিয়ে বাধ্য হয় বসন্তের কোকিল ব্যক্তিকে ভোট দিতে। সাংসদ ও এলাকার জনগণের দূরত্বকে পুঁজি করে রাজনৈতিক দলের নামধারী ব্যক্তিরা।
রাজনৈতিক দলগুলোর বর্ষীয়ান নেতারা বয়সের ভারে অনেকেই নতজানু। আবার যারা চলে গেছেন পৃথিবী ছেড়ে সেই স্থানগুলো পূরণ করার মতো নেতা নেই কোনো দলে। দল-মত, আদর্শগত বিভেদ দেশের রাজনীতিতে থাকবেই। কিন্তু সঠিক বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ যদি দলের মাঝে না সৃষ্টি হয় তা কল্যাণকর হয় না কারো জন্য।
একটি দেশের উন্নয়ন তখনই পরিপূর্ণ হবে যখন সে দেশ মেধা ও মননশীলতাতে এগিয়ে যাবে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন কেবল উন্নয়নের মানদণ্ড নয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের ছাত্রদের বারবার বলেছিলেন পড়ালেখাতে মনোনিবেশ করতে। কারণ তিনি জানতে সোনার বাংলা গড়তে হলে মেধাসম্পন্ন জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন রয়েছে। যারা তাদের মেধা আর প্রজ্ঞা দিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
অথচ আজ একুশ শতকের এ সময়ে বাঙ্গালি জাতি আগামী দিনের রাজনৈতিক মেধা আর প্রজ্ঞা নিয়ে চিন্তিত। কারণ তাদের সামনে প্রতিনিয়ত আসছে কেবল বিতর্কিত রাজনৈতিক নেতাকর্মীর নাম, সে হোক মূল দলের বা অঙ্গ সংগঠনের।